জেলার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা চিটাগাং রোড। এখানে পথচারীদের সড়ক পারাপারের জন্য আছে একটি ফুটওভার ব্রিজ। এ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত। ব্রিজটির এক পাশ অবৈধভাবে দখল করে বসেছে হকাররা। এতে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পথচারীরা স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারছে না। হাঁটতে গিয়ে গায়ের সঙ্গে গা লেগে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, চিটাগাং রোডের ফুটওভার ব্রিজের এক পাশ অবৈধভাবে দখল করে বসেছে প্রায় ১৫-২০টি দোকান। সেখানে মোবাইল ফোনের ব্যবহৃত এক্সেসরিস, পাওয়ার ব্যাংক, চামড়ার বেল্ট, মানিব্যাগ, ওজন মাপার যন্ত্র, পানির পট, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, গেঞ্জি, শার্ট, মোজা, ব্রাশ, পাপস, চাদর, টেবিল ক্লথ, কানের দুলের দোকান নিয়ে বসেছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হাকডাক দিচ্ছে। এসব দোকানের কারণে পথচারীরা ব্রিজ দিয়ে সহজে হাঁটতে পারে না।
ডেমরায় যাবেন তাই চিটাগাং রোডের ফুটওভার দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন আলী মিয়া। কথা হলে তিনি জানান, এ ফুটওভার ব্রিজে হকাররা দোকান নিয়ে বসায় ঠিকভাবে হাঁটা চলা করা যায় না। ব্রিজটি অনেক সরু লাগে। এখানে সব সময় ভিড় লেগে থাকতে দেখা যায়। এক প্রকার বাধ্য হয়ে আমাদের ব্রিজটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। অন্য কোনো ব্রিজ বা পথ থাকলে এ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতাম না। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজের নীচ দিয়ে চলাচল করছে।
ছোট ছেলেকে নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পার হচ্ছিলেন রোকেয়া বেগম। তিনি বলেন, ব্রিজে মানুষ ঠেলাঠেলি করে চলতে হয়। তার ওপরে আছে হকারদের হাঁকডাক। এখানের চারপাশের ফুটপাত সারা বছর হকারদের দখলে থাকে। ব্রিজটিতে উঠলেই আমাদের অনেক অস্বস্তিতে পড়তে হয়। দিনকে দিন হকারের সংখ্যা এখানে বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন আমাদের বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়।
ফুটওভার ব্রিজ দখলে রাখা এক হকার জানায়, এখানে ব্যবসা করতে আমাদের টাকা দিতে হয় না। তবে পুলিশ উঠিয়ে দেয়, পরে আবার বসি।
ফুটওভার ব্রিজের আরেক দোকানি বলেন, আমরা তো ইচ্ছে করে বসি না, পেটের দায়ে বসি। সরকার যদি আমাদের নির্দিষ্ট স্থান করে দেয় তাহলে আর বসব না। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন, এখানে ব্যবসা করতে হলে নিয়মিতই টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া ব্রিজে ব্যবসা করা অসম্ভব।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এ ফুটওভার ব্রিজ দখল নিয়ে কি করা যায়, এ বিষয়ে আমরা মিটিংয়ে বসব। কে বা কারা টাকা তুলে হকারদের কাছ থেকে আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো উচ্ছেদ অভিযান চালাইনি। ঈদের আগে বা পরে এদের (হকারদের) উচ্ছেদ করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল জসিম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে জানান, আমরা সম্মিলিত ভাবে উচ্ছেদ করে যাচ্ছি। যারা তারপরও বসে, তারা পুলিশের অগোচরে বসে। আশা করি এই সমস্যার শিগগিরই সমাধানে আসবে।
উচ্ছেদ অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুল ইসলামকে বারবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।