ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ২৮ ডিসেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন সাঈদীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অর্থ আত্মসাত মামলাটির মোট আসামি ৬ জন। বাকিরা হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।
আসামিদের মধ্যে দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ এবং আব্দুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে আছেন।
ইফার যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন।
এদিকে, ২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরের বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সাঈদীর বিরুদ্ধে এই মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত।
এদিকে, করফাঁকির মামলায় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) বকশীবাজারের বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে সাঈদীর বিরুদ্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) করা আয়কর ফাঁকির মামলায় বাদী পক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আদালতে আজ সাঈদীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। এ বিষয়ে আগামী ৬ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন এই আদালত।
এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বেলা পৌনে ১১টার আবার কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাঈদীর বিরুদ্ধে করফাঁকির মামলার অভিযোগ গঠন হয়।
এদিকে, ২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য কর ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা করফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট এনবিআর মামলাটি দায়ের করে। পরের বছর ১৫ সেপ্টেম্বর এই মামলায় সাঈদীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত।
সাঈদীকে আদালতে হাজির করার কারণে বকশীবাজার এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। তালিকাভুক্ত আইনজীবী ছাড়া আর কাউকেই আদালতে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
সাঈদীর বিরুদ্ধে ২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ এনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপ-কর কমিশনার মাসুমা খাতুন এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৫ সালের ১ জুলাই হতে ২০০৯ সালের ৩০ জুন সময়কালের মধ্যে আসামি এ কর ফাঁকি দিয়েছেন। মামলায় ৮ জনকে সাক্ষী করা হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।